ওলফগ্যাং অ্যামাডিউস মোৎজার্ট। পৃথিবী বিখ্যাত এই অস্ট্রিয় সুরকার ১৭৫৬ সালে জন্মেছিলেন অস্ট্রিয়ার সলসবুর্গ শহরে। প্রথমবার ইউরোপ যাত্রার সময়েই তালিকায় অস্ট্রিয়া এবং বিশেষ করে সলসবুর্গ রাখা হয়েছিল দুটি কারণে। প্রথমত এই শহরেই শ্যুটিং হয়েছিল সাউন্ড অফ মিউজিক ছবিটির এবং দ্বিতীয়ত এহল মোৎজার্টের জন্মস্থান। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে সুর সৃষ্টি করেন মোৎজার্ট। ১৭ বছরে সলসবুর্গের রাজদরবারে সঙ্গীতজ্ঞ হিসাবে নিযুক্ত হন। তার তৈরি করা ৬০০-এরও বেশি সুরের মধ্যে আছে অসংখ্যা সিম্ফনি, কনসার্ট, চেম্বার অর্কেস্ট্রা। অনেকেই বলেন তাঁর মতো প্রতিভাবান সুরকার পরবর্তীতে আর জন্মাননি। এসবই ছিল শোনা কথা। কিন্তু সলসবুর্গ শহরে পৌঁছে মনে হচ্ছিল যেন গোটা শহরটাই যেন সুরের স্রোতে ভাসছে। সুর-সাধনার অসংখ্য আয়োজন। প্রায় মধ্যরাতে পিয়ানো আর বেহালার যুগলবন্দি শুনে হোটেলে ফেরার সময় মনে হচ্ছিল যেন কোন অপার্থিব জগতে পৌঁছে গেছি। শহরের মাঝখানে সলসবুর্গ স্ক্যোয়ারের কাছেই মোৎজার্টের বাড়ি। ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। তবে ছবি তোলা বারণ। ছোট ছোট ঘর। সেযুগে যেমন ছিল ঠিক সেইভাবেই সাজানো। রয়েছে তাঁর ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র, তৈজনপত্র, আসবাব। কানে হেডফোন পরে নিলে প্রতিটি জিনিসের বিস্তারিত বিবরণ জেনে নিতেও অসুবিধা নেই। মিউজিয়াম দেখে আমরা এলাম সামনের স্কোয়্যারে। তখন বিকেল গড়িয়ে আসছে। সামনেই একটি কাফে। তার বাইরে পেতে রাখা চেয়ার বসে কল্পনা করার চেষ্টা করছিলাম এই নদির ধারের রাস্তা দিয়ে এসে এখানেই বাড়িতে ঢুকতেন মোৎজার্ট। বাড়ির যে জানলার কাচে ঝিকমিক করছে সূর্যাস্তের আলো সেখানে বসেই কি কোনওদিন তৈরি করেছিলেন নতুন কোনও সুর।